ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

নাব্যতা হারিয়ে ভূমি দস্যুদের কবলে পেকুয়ার ফাঁশিয়াখালী-জালিয়াকাটা খাল

এইচ এম রিয়াজ, পেকুয়া :::
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার ফাঁশিয়াখালী-জালিয়াকাটা এবং রাজাখালীর ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্যস্তময় খালটি এখন ভরাট হয়ে দিন দিন দখলে যাচ্ছে  ভূমি দস্যুদের কবলে। অন্যদিকে এর নাব্যতা হারিয়ে যাওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে নৌচলাচল।
শুষ্ক মৌসূমে দেখতে মনে হয় এযেন এক ছোটকাট নালা কিংবা ড্রেন। ফলে সবচেয়ে বেকায়দায় পড়েছে লবন ব্যবসায়ী ও বোট মালিকরা। ব্যাহত হচ্ছে পানি চলাচল, বিনষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। আর এর সুবাধে খালের দু’পাশ দিয়ে দিন দিন জেগে উঠা চর জমি দখলে নিতে সক্রিয়রুপে থেমে নেই ভূমি দস্যুরাও। আবার বর্ষায় পূর্ণিমা  জোয়ার ও ভারী বৃষ্টিপাত হলে চরাঞ্চলের বাড়ি-ঘড় ডুবে গিয়ে বেড়িবাঁধও অতিক্রম করে এ খালের পানি।
সরেজমিনে দেখাযায়, অন্তত পনের-বিশ (১৫-২০) ফুট চেয়ে বেশি প্রস্থ এবং ১০ ফুটেরও অধিক গভীরতম খালটি এখন ভরাট হয়ে এতই ছোট হয়েগেছে যে, দেখলে মনে হয় এযেন এক ছোটখাটো নালা। বোট সাম্পান চলা তো দুরের কথা কোন নৌকা পর্যন্তও এখন চলাচল করতে পারে না। নেই জোয়ারভাটার তেমন কোন স্রুত। অনেক স্থানে খালের পাশে জেগে উঠা নতুন চরে বড় বড় বিটে-বাড়ি তৈরী করে নিচ্ছে স্থানীয় ভূমি দস্যুরা। খালটির প্রবেশ মুখ মাতামুহুরি নদীর শাখা পেকুয়া ভোলা খালের সাথে। বুধামাঝিরঘোনা তথা ফাঁশিয়াখালী-জালিয়াকাটা দিয়ে প্রবেশ করে রাজাখালী, বারবাকিয়া এবং টৈইটং ইউনিয়নের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাঁশখালীর ছনুয়া খাল দিয়ে একেবারে কুতুবদিয়া চ্যানেলের সাথে মিশে গেছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ ভরাট হয়েছে বুধামাঝিরঘোনার প্রবেশ মুখ থেকে নোয়াখালীপাড়া ওয়াফদা কালবার্ট পর্যন্ত।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাযায়, খালটিতে পাঁচ-ছয় বছর আগেও দৈনন্দিন নিয়মিতভাবে বড় বড় লবন বুঝায় বোট এবং ট্রলার সহ ছোটবড় অনেক নৌকা সাম্পান চলাচল করত, কিন্তু এখন খালটি ভরে যাওয়াতে একেবারেই চলতে পারেনা কোন ধরনের নৌযান।
স্থানীয় কয়েকজন লবন ব্যাবসায়ী ও বোট মালিকদের সাথে কথা বলে জানাযায়, তারা এখন নিজস্ব লবন বাহী বোট সাম্পান এ পথ দিয়ে নিতে পারেনা, মাঝেমধ্যে পারলেও তা খুব কষ্টসাধ্য করে পূ্র্ণ জোয়ারের সময়। তারা আরো জানান, আগে এ পথ দিয়ে অনেক মালবাহী বোট সাম্পান প্রতিনিয়ত খুব সহজেই চট্রগ্রাম শহরে যাথায়েত করলেও বর্তমানে খালটি ভরে যাওয়ায় তা সম্পূর্ণ অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে।
তাই এলাকা বাসির দাবী, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং উপজেলা প্রশাসন যদি দ্রুত খালটির খনন না করে এবং এর দখল হওয়া দু’পাশের চর সমূহ ফিরিয়ে না নেয় তাহলে অতিসত্বর এ খালটি আসতে ভরাট হয়ে সম্পূর্ণ ভাবে বিলীন হয়ে যাবে। ফলে পানি চলাচল বন্ধ হলে মারাত্মক বন্যার সম্মুখীন হতে পারে এ অঞ্চলের লাখো মানুষ।

পাঠকের মতামত: